বোর্ড পরীক্ষার সার্টিফিকেট হারিয়ে গেলে আপনাকে কোন কাজগুলো করতে হবে।



পত্রিকা খুললে প্রায়ই চোখে পরে স্কুল/কলেজের সার্টিফিকেট হারিয়ে যাওয়ার সংবাদ। একজন মানুষের জীবনের অন্যতম অর্জন অমূল্য এই সার্টিফিকেটগুলো। যা হারিয়ে গেলে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু এ নিয়ে আতংকিত হওয়ার কিছু নেই। হারানো সার্টিফিকেট কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করে ফিরে পাওয়া যায়।
এই লেখায় বিস্তারিত জানিয়ে দিচ্ছি বোর্ড পরীক্ষার সার্টিফিকেট হারিয়ে গেলে আপনাকে কোন কাজগুলো করতে হবে।

প্রথম কাজ,

জিডি (জেনারেল ডায়েরি বা সাধারণ ডায়েরি) করা। নিকটস্থ থানায় গিয়ে কর্তব্যরত অফিসারকে বুঝিয়ে বলুন আপনার সার্টিফিকেট হারিয়ে গেছে এই কারণে আপনি একটি জিডি করাতে চান। তিনি আপনাকে কিছু প্রশ্ন করবেন যা জিডির জন্য প্রয়োজন। জিডি করাতে যাওয়ার আগে আপনার সার্টিফিকেটের মূল তথ্য যা আপনার মনে আছে (অথবা প্রবেশ পত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড) সুন্দর ভাবে লিখে নিয়ে যাবেন। তাহলে প্রয়োজনের মুহূর্তে সঠিক তথ্য দেয়া সম্ভব হবে।

দ্বিতীয় কাজ,

জিডির একটি কপি আপনাকে দেয়া হবে, যেখানে সকল বিস্তারিত তথ্য ও জিডি নাম্বার থাকবে। এটির কমপক্ষে ৫-৬টি ফটোকপি করে সংরক্ষণ করুন। পরে এগুলো দরকার হবে।

এবার,

যে কোন একটি পত্রিকা অফিসে যোগাযোগ করুন। হতে পারে তা দেশের সবচেয়ে প্রচলিত পত্রিকা বা আপনার স্থানীয় কোন পত্রিকা। তবে প্রচলিত পত্রিকা গুলোয় যোগাযোগ করা ভাল । পত্রিকায় হারানো বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে, এ ব্যাপারে পত্রিকায় দায়িত্ব রত ব্যক্তির সাথে কথা বলুন।
পত্রিকার বিজ্ঞাপনে যে সব বিষয় অবশ্যই উল্লেখ করতে হবেঃ
১. জিডি নাম্বার
২. সার্টিফিকেটে থাকা পরীক্ষার নাম
৩. বোর্ড
৪. পাশের সন
৫. নিজের নাম
৬. কিভাবে আপনার সার্টিফিকেট হারিয়েছে
এছাড়াও আরও কোন প্রয়োজনীয় তথ্য বাকি রয়ে গেলে তা আপনার কাছে পত্রিকায় দায়িত্ব রত কর্মকর্তা জিজ্ঞেস করবেন। কাজেই এ নিয়ে চিন্তিত হবেন না।

তৃতীয় কাজ,

জিডির কপি এবং পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞাপনটি কেটে সাথে নিন। যে শিক্ষাবোর্ডের অধীনে পরীক্ষা দিয়েছেন তার তথ্যসংগ্রহ কেন্দ্রে যোগাযোগ করুন। তাদের কাছ থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ করে নির্ভুলভাবে পূরণ করুন।

চতুর্থ কাজ,

সকল কাগজপত্র নিয়ে সোনালি ব্যাংকের কোন একটি শাখায় চলে যান, ডিমান্ড ড্রাফট করুন। এবার সকল কাগজপত্র যথা: জিডির কপি, পত্রিকার বিজ্ঞাপনের কাটিং, আবেদনপত্র এবং টাকা জমা দেয়ার রশিদ সব একত্রিত করে শিক্ষাবোর্ডের সচিবের নিকট আবেদন পত্র লিখুন।

আবেদন পত্রে যে তথ্যগুলো অবশ্যই থাকতে হবে,

আবেদনপত্র পূরণের ক্ষেত্রে প্রথমেই উল্লেখ করতে হবে আপনি কোন পরীক্ষার (মাধ্যমিক না উচ্চমাধ্যমিক) কী হারিয়েছেন এবং কী কারণে আবেদন করছেন। আবেদনপত্রের বিভিন্ন অংশে ইংরেজি বড় অক্ষরে এবং বাংলায় স্পষ্ট অক্ষরে পূর্ণ নাম, মাতার নাম, পিতার নাম, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম, রোল নম্বর, পাশের বিভাগ/জিপিএ, শাখা, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, শিক্ষাবর্ষ এবং জন্মতারিখসহ বিভিন্ন তথ্য লিখতে হবে। পরবর্তী অংশে জাতীয়তা, বিজ্ঞপ্তি যে দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে সেটির নাম ও তারিখ এবং সোনালী ব্যাংকের যে শাখায় ব্যাংক ড্রাফট করেছেন সে শাখার নাম, ড্রাফট নম্বর ও তারিখ উল্লেখ করতে হবে। আবেদনপত্রে প্রতিষ্ঠান প্রধানের সুপারিশের প্রয়োজন হবে। এতে তার দস্তখত ও নামসহ সিলমোহর থাকতে হবে।
আবেদন করার পর আপনার আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে কি না, কিভাবে পরবর্তীতে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে এবং সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে হবে এ সকল তথ্য বোর্ড থেকেই আপনাকে জানিয়ে দেয়া হবে। তথ্যগুলো লিখে রাখুন এবং নিয়মিত খোঁজ নিন।

নতুন সার্টিফিকেট পাওয়ার পর,

দয়া করে অফসেট কাগজে এর কিছু ফটোকপি করিয়ে রাখুন এবং এমন স্থানে রাখুন যাতে তা সহজে হারিয়ে না যায়। অথবা পানি, আগুন বা পোকার আক্রমণে বিনষ্ট না হয়।



আবেদন করার নিয়ম
বরাবর
অধ্যক্ষ,
 স্কুলের নাম


বিষয়ঃ এস এস সি পাশের সনদ উত্তোলন প্রসঙ্গে।


জনাব,
বিনীত নিবেদন এই যে আমি আপনার অত্র বিদ্যালয় থেকে (আপনার পাশের সন) সালে এস এস সি পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হই। এখন আমার ব্যাক্তিগত প্রয়োজনে এস.এস.সি পাশের সনদ টি প্রয়োজন। আমার এস.এস.সি এর রোল নং (আপনার এস এস সি রোল) ও রেজিঃ নং (আপনার এস এস সি রেজিস্ট্রেশন নং)।


অতএব, হুজুরের নিকট আমার আকুল আবেদন এই যে, আমাকে আমার উক্ত এস.এস.সি পাশের সনদ টি প্রদান করে বাধিত করবেন।


নিবেদক
আপনার নাম
Share:
spacer

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন